الأربعاء، 13 أكتوبر 2021

সিলেটে নাদেলের জয় ক্ষোভ নাসির আজাদ বলয়ে

 


সিলেট ছাত্রলীগের জট খুলেছে। ৪ বছর পর ঘোষণা করা হয়েছে সিলেট জে’লা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি। ঘোষিত কমিটিতে জয় হয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বলয়ের। এতে খুশী তার বলয়ের নেতাকর্মীরা। তবে- ক্ষুব্ধ জে’লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ বলয়ের নেতারা। নাসিরের বলয় থেকে সাধারণ সম্পাদক দেয়া হলেও এতে খুশী নয় ওই বলয়ের নেতারা। তারা গতকাল বিকালে সিলেটে বি’ক্ষোভ করেছে। ভাই ও দাদাদের বলয় থেকে বের হতে পারেনি সিলেট ছাত্রলীগ।

দীর্ঘদিন থেকে ভাই ও দাদাদের নেতৃত্বেই চলছে ছাত্রলীগ। এ নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। এ কারণে ২০১৭ সাল থেকে সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি দেয়া হয়নি। গ্রুপিং-দ্বন্দ্ব চাঙ্গা হওয়ার আশ’ঙ্কার কারণেই সিলেটে কমিটি দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এবার কমিটি দেয়ার তোড়জো’র শুরু করা হলেও ভাই ও দাদাদের দৌড়ঝাপে বিব্রত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৪ বছর পর গতকাল সিলেট জে’লা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এই কমিটির অনুমোদন দেন। কমিটিতে জে’লা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন নাজমুল ইস’লাম ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাহেল সিরাজ। মহানগর ছাত্রলীগে কিশওয়ার জাহান সৌরভকে সভাপতি ও মো. নাঈম আহম’দকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জানিয়েছে- এই কমিটি আগামী এক বছর দায়িত্ব পালন করবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে জে’লা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হবে।

এছাড়া কেন্দ্রীয় সদস্য হয়েছেন জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান, বিপ্লব কান্তি দাস, মুহিবুর রহমান মুহিব, কনক পাল অরূপ, হোসাইন মোহাম্ম’দ সাগর ও সঞ্জয় পাশী জয়। এছাড়া, মহানগর ছাত্রলীগ থেকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে হুসাইন মোহাম্ম’দ সাগর ও সঞ্জয় পাশী জয়কে।

ছাত্রলীগের তেলীহাওর গ্রুপের নেতারা জানিয়েছেন; এবার জে’লা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে তেলীহাওর গ্রুপ থেকে চাওয়া হয়েছিল জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খানকে। কিন্তু গ্রুপের ভেতরেই রাহেল সিরাজ জাওয়াদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু করেন। এ কারণে জাওয়াদকে কেন্দ্রীয় সদস্য করে রাহেল সিরাজকে জে’লা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হলেও তেলীহাওর গ্রুপের নেতারা সেটি মানেননি। এ কারণে এই গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গতকাল বিকালে গ্রুপের নেতাকর্মীরা সিলেটে বি’ক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

অ’পরদিকে, জে’লা ছাত্রলীগ নিয়ে মা’থা না ঘামালেও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি পেয়েছে ছাত্রলীগের দর্শনদেউরী গ্রুপ। ওই গ্রুপের সিনিয়র সদস্য কি’শোয়ার জাহার সৌরভ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল বলয়ের কর্মী সৌরভের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন শাহ আলম শাওন নামের আসাদ গ্রুপের এক নেতা। তিনি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্যও। কিন্তু শাওন শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকতে পারেননি। তবে. আসাদ বলয় থেকে কেন্দ্রীয় সদস্য করা হয়েছে হুসাইন মোহাম্ম’দ সাগর। মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাইম আহম’দ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিধান কুমা’র সাহার বলয়ের কাস্মির গ্রুপের নেতা। ওই গ্রুপের নেতা হলেও নাইমের সঙ্গে দর্শন দেউরী গ্রুপের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে স’ম্পর্ক ভালো রয়েছে। বিষয়টি আ’লোচিত হচ্ছে বিধান বলয়েও।

জে’লা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইস’লাম টিলাগড়ের রঞ্জিত বলয়ের ছাত্রলীগ নেতা। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের নাজমুলের প্রতি নজর ছিল। এ কারণে জে’লা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে মুহিবুর রহমান, জাওয়াদ খান ও রাহেল সিরাজ তীব্র প্রতিযোগিতা করলেও কাজ হয়নি। দীর্ঘদিন পর রঞ্জিত বলয়ে জে’লা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ গেল। আর এতে পুরোপুরি মাইনাস হয়েছেন টিলাগড় গ্রুপের আজাদ বলয়ের নেতারা। ঘোষিত কমিটির একটিতেও আজাদ বলয়ের কোনো নেতার নাম আসেনি। এ কারণে চরম ক্ষুব্ধ এই বলয়ের নেতারা। কারণ, টিলাগড়কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু হয়েছিল আজাদুর রহমান আজাদের হাত ধরেই। টিলাগড়কে বলা হয় ছাত্রলীগের হেডকোয়ার্টার। এরপরও আজাদ বলয় পুরোপুরি মাইনাস হওয়ার কারণে অ’বাক হয়েছেন অনেকেই। তবে, এ ব্যাপারে গতকাল বিকাল পর্যন্ত আজাদ বলয়ের নেতারা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি।

সিলেটের প্রয়াত নেতা বদর উদ্দিন আহম’দ কা’ম’রানের সাবেক বলয়ের নেতারা লবিং করলেও তাদের কারও জায়গা হয়নি। এদিকে, ছাত্রলীগের ঘোষিত কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য করা হলেও জাওয়াদ খান ও মুহিবুর রহমান পদ প্রত্যাখান করেছেন। গতকাল নিজেদের ফেসবুক আইডিতে তারা দু’জনই পদ প্রত্যাখান করে স্ট্যাটাস দেন। জাওয়াদ খান তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন- ‘প্রিয় সতীর্থ, সহযোদ্ধা শুভাকাঙ্খী; সদ্য ঘোষিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রেস বি’জ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানতে পারলাম আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মনোনীত করা হয়েছে। আমি উক্ত সদস্যপদ প্রত্যাখান করলাম। রাজনীতি থেকে যখন অ’প রাজনীতি শক্তিশালী হয়ে যায় তখন আমা’র মতো কর্মীর কাছে প্রত্যাখ্যান করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না।’ কেন্দ্রীয় সদস্যপদ পাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অব্যাহতি নিয়েছেন মুহিবুর রহমান মুহিব। মুহিব সিলেট জে’লা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি সভাপতির পদ প্রত্যাশী ছিলেন। এই কমিটি ঘোষণার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ প্রত্যাখান করে স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য করায় আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মানিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বা’স করি আমি এই বিশাল পদের যোগ্য নই। তাই আমি স্বেচ্ছায় এই পদ থেকে অব্যাহতি নিলাম।’


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: