السبت، 25 سبتمبر 2021

নিজের মেয়েকে ১২ বছর ধরে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা, অতঃপর…

 


প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজের মেয়েকে ১২ বছর ধরে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা করেছেন এক মা। অবশেষে মামলা দায়েরের ১২ বছর পর কথিত অপহৃতা জফুরা খাতুনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

তিনি নাম পরিবর্তন করে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে সোমবার রাতে ঢাকার কদমতলী থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে। মঙ্গলবার বেলা ২টায় তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ১২ বছর পূর্বে সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে ফুল মিয়ার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে হারুন মিয়ার। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। কিন্তু এলাকার কিছু কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় হারুন মিয়ার লোকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন ফুল মিয়ার স্ত্রী আমিনা খাতুন।

মামলাটি তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হলে হারুন মিয়াকে ঘায়েল করতে ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর আমিনা খাতুন নিজের মেয়ে জফুরা খাতুনকে অন্যত্র সরিয়ে রেখে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় আব্দুর রশিদ, ছুরুক মিয়া, আব্বাছ মিয়া ও হারুন মিয়াকে। এ মামলাটিও দুইবার তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

পরবর্তীতে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারিতে অভিযোগটি আমলে নেন বিচারক। পরে এ মামলায় আব্দুর রশিদ ও ছুরুক মিয়া দীর্ঘ কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে এবং আব্বাস মিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। হারুন মিয়া আত্মসমর্পণ করেননি।

ঘটনার দীর্ঘদিন পর জানা যায়, জফুরা খাতুন ফাতেমা নাম ধারণ করে ঢাকার কদমতলীর এএসটি এ্যাপারেল নামক গার্মেন্টসে চাকরি করছেন। পরে সদর থানার এসআই সনত চন্দ্র দাস ঢাকার পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

হারুন মিয়া বলেন, কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় ফুল মিয়ার স্ত্রী প্রথমে মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা ও পরে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আমাদের লোকজনকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু সত্য উদঘাটন হওয়ায় আমরা আনন্দিত। এ মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে আমাকে যে হয়রানি করা হয়েছে তার বিচার চাই।

সদর মডেল থানার ওসি মাসুক আলী জানান, ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: