মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় মোবাইলে লুডু খেলা নিয়ে বকা দেওয়ায় রতন মোল্লা নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আরও এক শিশু আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে পদ্মা সেতুর অ্যাপ্রোচ সড়কসংলগ্ন নির্জন স্থান থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বুধবার (২২ সেপ্টম্বর) মো. মেহেদী হাসান (১৮) নামে একজনকে আটক করে পুলিশ।
নিহত রতন মোল্লা (৮) শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার কৃষক জসিম মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় আহত সোহান (৯) একই এলাকার নাসির সিকদারের ছেলে।
অভিযুক্ত মেহেদী হাসান একই উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি মা বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের চরকান্দি এলাকার নানা আনসু বেপারির বাড়িতে কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বেড়াতে যান মো. মেহেদী হাসান। বাড়িতে যাওয়ার পর মেহেদী রতন মোল্লা ও সোহানের সঙ্গে মোবাইলে গেম খেলতেন। মঙ্গলবার সকালে সোহানের মায়ের মোবাইলে তারা তিনজন লুডু খেলে। খেলার সময় ছোট্ট রতন ও সোহান মেহেদীকে বকা দেয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে মেহেদী রতন ও সোহানকে হত্যার ছক কষেন। সে মোতাবেক গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঘোরানো ও নতুন রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে পদ্মা সেতুর এপ্রোচ সড়ক সংলগ্ন নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে সোহানকে পানি ও চানাচুর আনার জন্য ১০০ টাকা দিয়ে দোকানে যেতে বলেন। সোহান খাবার আনতে চলে যায় ততক্ষণে সন্ধ্যা নেমে গেছে। সোহান যেতেই মেহেদী রতনকে ওই নির্জন স্থানে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
প্রায় ২০ মিনিট পর সোহান এসে রতন কোথায় জানতে চায়। মেহেদী জানান, রতন বাড়ি চলে গেছে। এ কথা বলে মেহেদী সোহানকে নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যান। সেখানে নিয়ে সোহানকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করলে চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে এবং মেহেদী নানা বাড়ি পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা সোহানকে উদ্ধার করে।
নানা বাড়িতে পরিবারের লোকজন মেহেদীর সারা শরীরে কাদামাখা দেখে রতন ও সোহানের খোঁজ চায় স্বজনরা। কৌশলে মেহেদী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা শিবচর থানায় খবর দেয়।
পরে পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে এবং ঘটনাস্থলে রতনের লাশ দেখিয়ে দেয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় মোবাইল ফোনটিও। বুধবার মধ্যরাতে লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘মোবাইলে লুডু খেলার সময় ওরা আমার বাবা মাকে বকা দেয়। তাই ওদের আমি হত্যা করি।’
এ বিষয়ে শিবচর থানার ওসি মো. মিরাজ হোসেন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোবাইলে লুডু খেলার সময় বকা দেওয়া নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আটক হওয়া মেহেদী ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
0 coment rios: