সিলেটে নব নির্মিত কদমতলী আধুনিক বাস টার্মিনাল উদ্বোধনের আগেই ত্রুটি ধরা পড়েছে। ত্রুটির বিষয় তুলে ধরেছেন খোদ সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আর কাজে গাফিলতি খতিয়ে দেখতে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নগর কর্তৃপক্ষ।আগামী ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে এই কমিটি।
শনিবার (১ এপ্রিল) বিকেলে নগর ভবনের সভা কক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে আধুনিক বাস টার্মিনালের একটি অংশে ত্রুটি ধরা পড়ে।তাৎক্ষনিকভাবে আমি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শন করেন।এনিয়ে জনমনে কোন বিভ্রান্তির যেন না ছড়ানো হয়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।
সিসিক মেয়র বলেন, তদন্ত কমিটি আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়া এখনও সিসিকের কাছে এই প্রকল্পটি নির্মাণ সংস্থা হস্তান্তর করেনি।
উদ্বোধনের জন্য অপেক্ষমান বাস টার্মিনালটিতে সুযোগ সুবিধা সমূহ ঠিক আছে কি না, তা পর্যবেক্ষনের জন্য পরিক্ষামূলকভাবে সেবা প্রদান শুরু হয়। এরই মধ্যে স্থাপনাটির একটি অংশে কিছু ত্রুটি দেখা যায়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর প্রমুখ।
উল্লেখ্য, উদ্বোধনের আগেই ১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আধুনিক এ বাস টার্মিনাল পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়।
উদ্বোধনের প্রস্তুতি হিসেবে পরীক্ষামূলক সেবা চালুর সময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দেশ সেরা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এই বাস টার্মিনাল সিলেটের জন্য গর্বের একটি প্রতিষ্ঠান। কদমতলি বাস টার্মিনাল চালু হলে পরিবহন ব্যবস্থায় সিলেট বিশ্বমানে যুক্ত হবে।
মেয়র আরিফ আরও বলেন, সিলেটের পরিবহন সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবির
প্রেক্ষিতে বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে যেসকল সুবিধা নিশ্চিত
করা হয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে সবাইকে। যত্রতত্র
ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে বাস
টার্মিনালের সেবা প্রদানে বিঘ্ন সৃষ্টি করা যাবে না। সবাই মিলে সরকারি এই
প্রতিষ্ঠানটির সেবার মান ও সুবিধা সমূহ যাত্রী সাধারণের জন্য নিশ্চিত করতে
পারলেই সার্থকতা আসবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বকস, প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর এডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ, সংরক্ষিত কাউন্সিরর রেবেকা আক্তার লাকী, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হক, প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর, নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, সিলেটের পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে- মিউনিসিপ্যাল গভর্নমেন্ট সার্ভিস প্রজেক্ট- এমজিএসপি প্রকল্পে সিলেট সিটি কর্পোরেশন দেশের সর্বাধুনিক সুবিধাসম্বলিত ‘কদমতলী বাস টার্মিনাল’ নির্মাণ করছে। ৮ একর ভূমিতে ৬৫ (পয়ষট্টি) কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পে বিমানন্দরের আদলে বহির্গমন ও আগমনের আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্থাপনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে গোলাকার পাঁচতলা একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে টার্মিনাল পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়, কন্ট্রোল রুম, পুলিশ কক্ষ এবং পর্যটন কার্যালয় স্থাপন করা হবে।
যাত্রী উঠানামার জন্য পৃথক টার্মিনাল ভবন, সুপরিসর পার্কিং ব্যবস্থা, পরিবহন সেবাদানকারীদের জন্য যাবতীয় সুবিধা সম্বলিত পৃথক ভবন, রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট, পর্যাপ্ত যাত্রী বিশ্রামাগার, নারী, পুরুষ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য আলাদা আলাদা শৌচাগার, ব্রেস্ট ফিডিং জোন, স্মোকিং জোন, ছোট দোকান, অসুস্থ যাত্রীদের জন্য সিকবেড, প্রার্থণা কক্ষ সহ সকল প্রকার আধুনিক সেবা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এই স্থাপনায়। এছাড়া, পরিবহন মালিক শ্রমিকদের সভা অনুষ্ঠানের জন্য বিশাল হলরুম এবং যানবাহনের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়ার্কশপ স্থাপন করা হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন