Pages

শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

জরুরি ভিত্তিতে টিকা নিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে: জাতিসংঘে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

 

করোনা মোকাবিলায় গোটা বিশ্বকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর বৈশ্বিক উদ্যোগের ঘাটতির বিষয়কে সামনে নিয়ে এসেছে কভিড-১৯ মহামারি। একই সঙ্গে এটি বৈশ্বিক সংহতি ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপরও আলোকপাত করেছে। সর্বজনীন বিষয়গুলোয় বিশ্বকে অবশ্যই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নতুন নতুন অংশীদারিত্ব ও সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে।

তিনি বলেন, কভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তুলতে সবার জন্য সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে টিকা নিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। অবিলম্বে টিকা প্রযুক্তি হস্তান্তর টিকার সমতা নিশ্চিত করার একটি উপায় হতে পারে।

 

শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও এই মহামারি আরও বেশ কিছুদিন স্থায়ী হবে বলে মনে হচ্ছে। সেজন্য এ অভিন্ন শত্রুকে মোকাবিলা করার জন্য অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন আমাদের অনেক বেশি নতুন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈশ্বিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।’

কোভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “গত বছর এ অধিবেশনে আমি কোভিড-১৯ টিকাকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। বিশ্বনেতাদের অনেকে তখন এ বিষয়ে সহমত পোষণ করেছিলেন। সে আবেদনে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। বরং আমরা ধনী ও দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে টিকা বৈষম্য বাড়তে দেখেছি।”

উৎপাদিত টিকার ৮৪ শতাংশ উচ্চ ও উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মানুষের কাছে পৌঁছেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিম্ন আয়ের দেশগুলো এক শতাংশেরও কম টিকা পেয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘জরুরিভিত্তিতে এ টিকা বৈষম্য দূর করতে হবে। লাখ লাখ মানুষকে টিকা থেকে দূরে রেখে কখনই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা পুরোপুরি নিরাপদও থাকতে পারবো না।’

সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অবিলম্বে টিকা প্রযুক্তি হস্তান্তর টিকার সমতা নিশ্চিত করার একটি উপায় হতে পারে। প্রযুক্তি সহায়তা ও মেধাস্বত্ত্বে ছাড় পেলে বাংলাদেশও ব্যাপক পরিমাণে টিকা তৈরি করতে সক্ষম।’

কোভিড-১৯ মহামারির প্রকোপ আশঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশে অনেক কম হয়েছে। এমনটি জাতিসংঘকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায় থেকে আমাদের শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া, এ মহামারি মোকাবিলায় আমাদের সময়োচিত, সমন্বিত ও বহুমুখী উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য রক্ষা করতে শুরুতে আমাদের বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল।’

অর্থনীতিকে সচল রাখতে দেয়া ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রায় ১ হাজার ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দ দিয়েছি, যা মোট দেশজ উৎপাদনের ৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ। করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহের জন্য চলতি অর্থবছরে বাজেটে ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের সংস্থান রাখা হয়েছে।’

 

অতি দরিদ্র, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, বিদেশ-ফেরত প্রবাসী ও অসহায় নারীদের মতো সমাজের দুর্বলতর জনগোষ্ঠীর জন্যে তার সরকার পর্যাপ্ত উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘গত বছর মহামারির প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে আমরা প্রায় ৪ কোটি মানুষকে নগদ অর্থসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়েছি।’

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন