সড়কে ট্রাফিক পুলিশের দেয়া মামলার কারণে বিরক্ত হয়ে সোমবার সকালে নিজের মোটরসাইকেলে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় শওকত আলী নামে এক পাঠাও চালক। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হয়রানি বন্ধসহ ছয় দাবিতে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সারা দেশে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে অ্যাপ-বেইজড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা রাইডশেয়ারিং ড্রাইভারস ইউনিয়নের (ডিআরডিইউ) সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তথ্য জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অ্যাপস নির্ভর শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, কর্ম ও সময়ের মূল্য দেওয়া, সব ধরনের রাইডে কমিশন ১০ শতাংশ নির্ধারণ, মিথ্যা অজুহাতে কর্মহীন করা থেকে বিরত রাখা, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে রাইড শেয়ারিংয়ের যানবাহন দাঁড়ানোর জায়গার ব্যবস্থা করা, সব ধরনের পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা ও এনলিস্টকৃত রাইড শেয়ারকারী যানবাহনগুলোকে গণপরিবহনের আওতায় অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) মুক্ত রাখা।
বিজ্ঞপ্তিতে ডিআরডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ বলেন, বাড্ডার
ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। হয়রানির জন্য একজন চালক তার মোটরসাইকেলে আগুন
ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনাও যদি পুলিশকে নাড়া না দেয়, তাহলে কি আত্মহুতি
দিলে তাদের বিবেক নাড়া দেবে?
কর্মবিরতির বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কয়েকটি দাবি
জানিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রহণ করেনি। আমরা ষষ্ঠবারের মতো
আন্দোলনে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো। কোনো ভায়োলেন্সে বিশ্বাসী
না।
তিনি বলেন, সব জায়গাতেই হয়রানির শিকার হচ্ছি আমরা। আমাদের কোথাও দাঁড়ানোর
জায়গা নেই, দাঁড়াতে দেখলেই ট্রাফিক পুলিশ এমন জরিমানা করে, যা আমরা সাত
দিনেও আয় করতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গাড়ি, জ্বালানি ও শ্রমের বিনিময়ে যে টাকা পাই, তা
থেকে আধুনিক কমিশন গ্রহণকারী কোম্পানিগুলো ২৫ শতাংশের বেশি কেড়ে নিচ্ছে।
তার ওপর বিনা অজুহাতে অ্যাপ বন্ধ করে আমাদের করছে কর্মহীন। মাস শেষে
ধার-দেনা করে করাতে হচ্ছে গাড়ির কাজ, আর বছর শেষে তুলতে হচ্ছে লোন। ফলে
আমরা দিন দিন দেউলিয়া হচ্ছি।
এর আগে, সোমবার সকালে রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় রাইড শেয়ারিং
অ্যাপস পাঠাওয়ের শওকত আলম সোহেল নামে এক চালক ট্রাফিক পুলিশের হয়রানির
প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। দ্রুতই এই ঘটনা
ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে ওই চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য
থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন